Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

পাটচাষিদের সফলতা

পাটচাষিদের সফলতা
কৃষিবিদ ড. এ. টি. এম. মোরশেদ আলম
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের একটি প্রাচীনতম গবেষণা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত পাট ও পাটজাতীয় আঁশ ফসলের ৫৪টি উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে। এসব উচ্চফলনশীল জাতের মধ্যে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের বিগত ১৩ বছরের শাসনামলে প্রায় ১৪টি জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। এসব উচ্চফলনশীল পাট ও পাটজাতীয় আঁশ ফসলের জাত চাষাবাদ করে কৃষক বেশ লাভবান হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে পাট, কেনাফ ও মেস্তা ফসল চাষাবাদকারী কৃষক/ উদ্যোক্তার সফলতা উপস্থাপন করা হলো।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বেনাপোল থেকে প্রায় ২৪ কিলোমিটার আগে অবস্থিত যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা। এ উপজেলার কৃষক মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। যদিও তিনি পাট চাষাবাদের সাথে পূর্বেই পরিচিত ছিলেন তবুও তিনি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের রাজস্ব বাজেটের কর্মসূচির আওতায় পাট গবেষণা উপকেন্দ্র মণিরামপুর, যশোর-এর মাধ্যমে পাট চাষাবাদের উপর জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য পাট ফসল উৎপাদনের বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি ও রোগবালাই দমন ব্যবস্থাপনার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এ প্রসঙ্গে মোঃ আবদুর রাজ্জাক বলেন “এ প্রশিক্ষণের আগে উচ্চফলনশীল পাট জাত, বীজ নির্বাচন, রোগ-কীটপতঙ্গ দমন ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি সম্পর্কে আমার কোন পরিষ্কার ধারণা ছিল না এবং আমি সাধারণত ভারতীয় জাতের (জেআরও-৫২৪) পাটের বীজ ক্রয় করে সনাতন পদ্ধতি অনুসরণ করে ছিটিয়ে বীজ বপন করতাম। সে জন্য আমি আশানুযায়ী ফলন পেতাম না; তদুপরি আমি বিভিন্ন সমস্যা এবং আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি।
পাট গবেষণা উপকেন্দ্র মনিরামপুর, যশোর থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তিনি গত বছর বিজেআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত বিজেআরআই তোষা পাট-৮ (রবি-১) এর বীজ এক বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে সারি করে বপন করেন।
এ প্রসঙ্গে মোঃ আবদুর রাজ্জাক বলেন “আমি এবং আমার পরিবার গত ৫০ বছর যাবত পাট চাষ করছি এবং আমি বা আমার বাবা বা দাদা কখনও পাট আঁশের এমন ফলন বা এমন উন্নত মানের আঁশ দেখতে পাইনি”।
এ জমি থেকে জনাব আবদুর রাজ্জাক ১৪ মণ পাটের আঁশ এবং প্রায় ৩৫ মণ পাট খড়ি পান। উৎপাদিত পাট বিক্রি করে উৎপাদন খরচ বাদে তাঁর ২৩০০০/- (তেইশ হাজার) টাকা লাভ হয়। একই পরিমাণ জমিতে ২০১৮-২০১৯ ইং অর্থবছরে ভারতীয় জাতের (মহারাষ্ট্র) পাটবীজ (জেআরও-৫২৪) বপন করে উৎপাদন খরচ বাদে তার ১৩৫০০/- (তের হাজার পাঁচ শত) টাকা লাভ হয়। বিজেআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল জাতের তোষা পাট, বিজেআরআই তোষা পাট-৮ (রবি-১) চাষাবাদে এ অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য তিনি বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অনুরূপভাবে পাটের আবাদ এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে, বিশেষ করে কিশোরগঞ্জে কেনাফের আবাদ দিন দিন বেড়েই চলছে। এ দেশের পাটচাষিগণ দেশের বাইরের আমদানিকৃত বীজ দ্বারা পাট আবাদ করে প্রায়ই প্রতারিত হন। বিজেআরআই উদ্ভাবিত এইচসি-৯৫ জাতের কেনাফ বীজের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় পাটচাষিগণ দেশের বাহিরের বীজ বপন করে কম ফলন পান। কিন্তু এইচসি-৯৫ জাতের কেনাফ চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছেন কৃষক মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক তিনি একজন পুরনো পাটচাষি। তিনি প্রায় ১২ বছর যাবত পাট চাষ করছেন। এক সময় তিনি প্রচুর পাটের আবাদ করতেন। মাঝে কয়েক বছর পাটের দাম কম পাওয়ায় আশাহত হন। বিগত ২-৩ বছর যাবৎ আবহাওয়া অনুকূল থাকায়, পাটের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় এবং ঠিক সময় সার, গুণগত মানের বীজ বিশেষ করে পাট গবেষণার উচ্চফলনশীল এইচসি-৯৫ জাতের বীজ ব্যবহার করে সঠিক সময়ে আবাদ করে তিনি অনেক লাভবান হয়েছেন।
পাটচাষি মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘আমি এবার ১ (এক) একর জমিতে পাট গবেষণার কেনাফ বীজ এইচসি-৯৫ আবাদ করে ৩০ মণ আঁশ পেয়েছি, যা গড়ে ২,২০০/-(দুই হাজার দুই শত) টাকা মণ দরে বিক্রি করে মোট ৬৬,০০০/- (ছয়ষট্টি হাজার) টাকা এবং পাশাপাশি মোট ২৬,০০০/- (ছাব্বিশ হাজার) টাকার পাটকাঠিও বিক্রি করেছি’। কৃষক মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিকের মতে, পাট চাষে বিশেষ করে কেনাফের জমিতে তেমন নিড়ি আর কীটনাশক প্রয়োগের খরচ নেই। জমি চাষ, সার, পাট কাটা, আঁশ সংগ্রহ করতেই যতটুকু খরচ। তিনি বলেন, সব মিলিয়ে ২২,০০০/- (বাইশ হাজার) টাকা খরচ হয়েছে যা পাটকাঠি বিক্রির টাকা দিয়েই পূরণ হয়েছে। এতে পাট বিক্রির পুরো টাকাই তার নিট আয়। এ বছর তিনি প্রায় ৭০,০০০/- (সত্তর হাজার) টাকা আয় করেন শুধু পাটজাতীয় আঁশ ফসল কেনাফ চাষ করে।
পাট গাছ জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে। পাট ফসল চাষের পর ওই জমিতে অন্য ফসল আবাদ করলে সার দিতে হয় কম এবং জমির স্বাস্থ্য ভালো থাকে। তার মতে, জমির শস্যবিন্যাসে অবশ্যই পাট/পাট জাতীয় আঁশ ফসলকে রাখা উচিত। সফল পাটচাষি মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিকের সাফল্য দেখে অনেকেই পাট চাষে বিশেষ করে বিজেআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত এইচসি-৯৫ আবাদে খুবই আগ্রহী হয়ে উঠছেন। মোঃ আবু বক্কর পাট বিক্রি করে ছেলে মেয়ের পড়াশোনা এবং সাংসারিক ব্যয় মিটান। এলাকায় কেনাফ চাষ প্রসঙ্গে স্থানীয়  উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জনাব মোঃ কামালউদ্দিন জানান, দেহুন্দা ইউনিয়নে কয়েক শতাধিক একর জমিতে কেনাফের জাত এইচসি-৯৫ এর আবাদ হয়। কৃষকরা খুবই ভালো ফলন পান এবং রোগবালাইও কম হয়। সফল পাটচাষি মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক তাঁর সফলতার জন্য বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সারাদেশে বিজেআরআই উদ্ভাবিত জাতসমূহের সম্প্রসারণ ও বীজের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে পারলে কৃষক লাভবান হবেন এবং পাটের সোনালি আঁশের সুদিন আবার ফিরে আসবে বলে বিশ্বাস করেন মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিকের মতো সফল পাট চাষিরা।
চা-এর বিকল্প রোজেলি ড্রিংক্স উৎপাদনে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর-এ অর্থনীতি বিভাগের তরুণ উদ্যোক্তা ০৩ জন শিক্ষার্থী। রিফাত শাহরিয়ার, আল মোতহাসিম বিল্লাহ এবং মাহমুদুর রহমান স্নাতক শেষ শিক্ষাবর্ষে অধ্যয়নকালীন সময়ে চাকরি না করে নতুন কোন জিনিস নিয়ে কাজ করার কথা ভাবেন। একাজে প্রথমেই সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, রংপুর-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ আবুল ফজল মোল্লা। তিনি মেস্তার চাষাবাদে পরামর্শ দেন এবং কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করেন। মেস্তার ক্যালিক্স উৎপাদন প্রকল্পের সফলতা প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় প্রথমে ৪ (চার) বিঘা জমির উপর, এ প্রকল্পের কাজ শুরু করেন। এখান থেকে মেস্তার ৩.৫০ টন কাঁচা ক্যালিক্স সংগ্রহ করেন এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের পর যা থেকে ৩২০ কেজি শুকনা ক্যালিক্স পাওয়া যায় যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১২ লাখ টাকা।
তারা আরো বলেন, আমাদের দেশে এ পানীয় নতুন হওয়ায় মানুষের কাছে এর পরিচিতি কম, যার ফলে তারা প্রথমে একটু প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন। তবে আশাবাদী, সরকারি সহযোগিতা পেলে এবং গণমাধ্যমের সক্রিয় ভূমিকা থাকলে খুব শীঘ্রই এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবেন। মেস্তার এই ক্যালিক্স দিয়ে চা সদৃশ পানীয় ছাড়াও আচার, জ্যাম, চাটনি, জুস, বার ইত্যাদি তৈরি করা সম্ভব। রোজেলি ড্রিংক্স যেমন- মূল্যবান তেমনি পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। এ পানীয় পানে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়াও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, শরীরে ওজন কমাতে সাহায্য করে। এ পানীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সক্ষম। প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ রোজেলি ড্রিংক্স পিরিয়ডের ব্যথা প্রশমন করে। রোজেলি ড্রিংক্স নিয়ে অল্প কিছুদিন কাজ করেই তারা বেশ সফলতা পেয়েছেন। ইয়ং বাংলা আয়োজিত স্টুডেন্ট টু স্টার্ট অফ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে ২২৫০টি টিমের মধ্যে তারা রানারআপ হয়েছেন।
আমাদের দেশে চা এর বিকল্প এ ড্রিংক্স নতুন হলেও বিভিন্ন দেশে পূর্ব থেকেই এর প্রচলন আছে। তাই আমরা আশাবাদী, ভবিষ্যতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রোজেলি ড্রিংক্স তৈরির উপকরণ বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে। এ কাজে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য উদ্যোক্তাগণ বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, আঞ্চলিক কেন্দ্র, রংপুর-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
পাট একটি কৃষি পণ্য এবং এটি একই সাথে একটি শিল্প পণ্য, যা পরিবেশবান্ধব। তাই আমাদের দেশে পাট চাষিদের নিট আয় এবং পাট আঁশের নিট উৎপাদন উভয়ই বৃদ্ধি করতে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত বিজেআরআই তোষা পাট-৮ (রবি-১), উচ্চফলনশীল জাতের কেনাফ এইচসি-৯৫ এবং পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ মেস্তার জাত বিজেআরআই মেস্তা-২ (সবজি মেস্তা-১)-এর চাষাবাদ সম্প্রসারণ করার অনেক সুযোগ ও সম্ভাবনা আছে বলে বিজেআরআই-এর বিজ্ঞানীগণ বিশ^াস করেন।

লেখক : মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ বিভাগ, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, মানিক মিয়া এভিনিউ, ঢাকা-১২০৭, মোবাইল : ০১৭৪০-৫৫৯১৫৫,
ই-মেইল : norshedbjri@gmail.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon